কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
আড়াই বছরের ঐতিহ্য
কোটালীপাড়ায় তিন দিনব্যাপী নৌকাবাইচ শুরু
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী বিলবাঘীয়ার নৌকাবাইচ শুরু হয়েছে।
আজ শুক্রবার শুরু হওয়া বাইচ আগামীকাল রবিবার পর্যন্ত চলবে। এটি দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সর্ববৃহৎ নৌকাবাইচ জানিয়েছেন আয়োজকেরা। এ উপলক্ষ্যে খালের দুপাড়ে গ্রামীণ মেলা বসে।
জানা যায়, ২৫০ বছর ধরে উপজেলার কালিগঞ্জ-বুরুয়া খালে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ বিলবাঘীয়ার নৌকাবাইচ হয়।
বাইচ দেখতে হাজারো দর্শক সমাগম ঘটে খাল পাড়ে। বছরে দুবার এই খালে বাইচ হয়ে থাকে। এর আগে বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে এক দিন ও শ্রী শ্রী লক্ষ্মী পূজা উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী বাইচ আয়োজন করা হয়। তিনদিনের বাইচে কোনো পুরস্কারের ব্যবস্থা করা না হলেও প্রতিযোগী নৌকা ও দর্শকদের সমাগমের কোনো ঘাটতি থাকে না।
- কালিগঞ্জ-বুরুয়া খালে নৌকাবাইচ প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ
- বিলবাঘীয়ার বাইচ উপলক্ষে খালের দুপাড়ে বসে গ্রামীণ মেলা
কালিগঞ্জ-বুরুয়া খালে বাইচের জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাছারি, জয়নগরী, ময়ুরপঙ্খী, ছিপ, গয়না, পানসি, কোষা, ডিঙ্গি নৌকা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী মাদারীপুর, বরিশাল, ফরিদপুরসহ গোপালগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নৌকা আসে প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করার জন্য।
বাইচ উপলক্ষে প্রতিদিন সমানতালে নৌকা ও দর্শকদের আগমন ঘটে। ছোট-বড় মিলিয়ে ১০০ থেকে ১৫০ নৌকা উপস্থিত হয় কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করার জন্য। বাইচ দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে হাজারো দর্শকদের সমাগম ঘটে। দুপাড়ই পূর্ণ হয়ে যায় দর্শকে।
এদিকে নৌকাবাইচ উপলক্ষে খালের দুই পাড়েই বসে বাহারি দোকানপাট। কালিগঞ্জ থেকে বুরুয়া বড় সেতু পর্যন্ত খালের দুপাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই মেলা।
বাইচ দেখতে আসা রিপন ঘটক অয়ন বলেন, ‘আমি নারায়নগঞ্জে একটা কোম্পানিতে কর্মরত আছি। এই সময়ে বাড়িতে আসা হয় শুধু নৌকাবাইচ দেখার জন্য। নৌকাবাইচ দেখতে এসে খুবই ভালো লাগছে।’
মুকসুদপুর থেকে নৌকা নিয়ে আসা কামিনী রায় বলেন, ‘বিলবাঘীয়ার নৌকাবাইচে প্রতি নৌকা নিয়ে আসি বাইচ দেওয়ার জন্য। এ বছরও এসেছি, আমাদের ওখান থেকে চারখান নৌকা নিয়ে এসেছি কুইজ দেওয়ার জন্য।’
উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বিজন বিশ্বাস বলেন, ‘গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী বিলবাঘীয়ার নৌকাবাইচ আড়াইশো বছরের ঐতিহ্য। আমরা সবাই মিলে এই উৎসবে অংশগ্রহণ করে আসছি।’